IQNA

দুর্নাম ছুঁতে পারে নি রানীকে - ঠিক এ কথার উল্টোটাই হচ্ছে সত্য 

12:42 - September 11, 2022
সংবাদ: 3472440
তেহরান (ইকনা): রানীর গোটা অস্তিত্বকেই দুর্নাম ছুঁয়ে আছে ! রানীর গোটা অস্তিত্বই দুর্নাম ও কলঙ্ক। পূর্ব পুরুষদের পাপের সকল বোঝা ও দুর্নাম রানীর ঘাড়ে তো আছেই তা ছাড়াও রানীর নিজের অন্যায় ও পাপের দুর্নাম ও কলঙ্ক তার অস্তিত্বের পরতে পরতে মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে যা কোনোদিন ঘুঁচবে না ও দূরও হবে না । 

এখন ইত্তেফাকের মতো পশ্চিমাদের সেবাদাসী মিডিয়া কলঙ্কিত অপরাধী এ রানীর পক্ষে যতই সাফাই গাক না কেন!! এ রানীকে অপরাধী ডাইনি বুড়ি বলে অভিহিত করা উচিত। পৃথিবীতে মিলিয়ন মিলিয়ন নিরীহ নিরাপরাধ মানুষ এই ডাইনী রক্তপিপাসু রানীর শাসনামলে আগ্রাসী ব্রিটিশ ও মার্কিন সেনা বাহিনীর হামলায় গোটা বিশ্বে প্রাণ হারিয়েছে। 
 
ব্রিটেনের রাজা বা রানীর অনুমোদন ও নির্দেশ ব্যতীত ব্রিটিশ সরকার ও সেনাবাহিনী কোনো যুদ্ধে জড়াতে ও সামরিক অভিযান চালাতে এবং তাতে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এই বুড়ী ডাইনিটা চরম বর্ণ বৈষম্যবাদীও ছিল যা তার কনিষ্ঠ পৌত্র বধু মেগান নিজেই বলেছে। এম আই সিক্স যার নিয়ন্ত্রণ রানীর হাতে তা ডাইনি রানী এলিজাবেথের নির্দেশে বিশ্বের বহু দেশে সামরিক অভ্যুত্থান ও  কুদ্যেতা ঘটিয়েছে । যদি ব্রিটেন ও রানীর পা চাটা সেবাদাস ও সেবাদাসীরা বলে যে রানীর কিছু করার ছিল না। কারণ তার কোনো ক্ষমতা নেই । এসব কিছু তার অমতে সরকার ও এম আই সিক্স করেছে তাহলে রানীর উচিত ছিল এ সব অপরাধী ব্রিটিশ সরকার ও প্রশাসন এবং এম আই সিক্সকে শাস্তি দেওয়া ; আর শাস্তি দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব না হলে তার চাচা রাজা অষ্টম এডওয়ার্ড যেমন চাচী মিসেস সিম্পসনের প্রেমে রাজ সিংহাসন ত্যাগ করে নাকি অপূর্ব খাঁটি প্রেম ও ভালোবাসার উপাখ্যান সৃষ্টি ও দৃষ্টান্ত (?) স্থাপন করেছিল ঠিক তেমনি রানীর উচিত ছিল ব্রিটিশ সরকার , প্রশাসন ও এম আই সিক্সের অপরাধ ও অপকর্মের প্রতিবাদে ইস্তফা দেওয়া ও সিংহাসন ত্যাগ করে নিভৃতে ঘরে বসে ইবাদত বন্দেগীতে লিপ্ত থাকা। কিন্তু তা তো সে করেই নাই বরং ৯৬ বছর বয়সেও জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রেখেছিল  এই হারামজাদী ডাইনী খবীস হারামী মালঊন বুড়ীটা । এই হারামী বেশ্যা ডাইনী খবীস রানীর নির্দেশে এম আই সিক্স সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ইরানের নির্বাচিত মোসাদ্দেক সরকারের পতন ঘটিয়ে ইরানের স্বৈরাচারী যালেম শাহকে সরকারী ক্ষমতায় ফিরিয়ে এনেছিল এবং ইরানের পেট্রোলিয়াম তেল সম্পদ ১৯৫৩ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ব্রিটেনের রানী ও তার সরকার লুটেপুটে খেয়েছে।
 
ইরান ইরাক যুদ্ধে ইরানের বিরুদ্ধে সাদ্দামকে সর্বাত্মক সাহায্য করেছে ব্রিটেন এবং নিহত এক মিলিয়ন ইরাকী ও ইরানীর রক্তমূল্য রানীর ঘাড়ে রয়েছে। ১৯৯০ সালে ও ২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসন ও দেশটি দখলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ব্রিটেনও অংশগ্রহণ করলে অন্তত: দুই মিলিয়নের অধিক ইরাকী প্রাণ হারিয়েছে । 
 
আফগানিস্তান দখলেও রানীর ব্রিটিশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অংশগ্রহণ করে এবং মিলিয়নের অধিক আফগানকে হত্যা করেছে। ইয়েমেনে সৌদি আমিরাতী আগ্রাসনে ঐ দুই আগ্রাসী দেশকে সর্বাত্মক সাহায্য ও সহযোগিতা করেছে রানীর নিয়ন্ত্রণাধীন ব্রিটিশ সরকার এবং এ আগ্রাসনে লক্ষাধিক ইয়েমেনী প্রাণ হারিয়েছেন ও শহীদ হয়েছেন। ফিলিস্তীন সমস্যা ব্রিটেনের সৃষ্টি এবং ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক মদদ ও আসকারা পেয়েই এই রানীর শাসনামলে হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তীনী ও লেবাননীকে ইসরাইল হত্যা করেছে ও করছে। 
 
এ ছাড়া ব্রিটেন এই রানীর শাসনামলে লিবিয়া, সোমালিয়া, কোরিয়া , ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধ ও আগ্রাসনে অংশ নিয়েছে এবং মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রানী শাসিত ব্রিটেন। ব্রিটেনে আসলে রানী ছিল সর্বেসর্বা এবং সব কলকাঠি সেই নাড়ত । তার হাতেই রয়েছে সশস্ত্র বাহিনী। তার অনুমোদন ও নির্দেশ ব্যতীত ব্রিটিশ সরকার কারো সাথে কোন চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারবে না আর করলেও তা রানী ভেটো দিলে কোনো দিন বাস্তবায়িত হবে না ; রানীর অনুমতি ব্যতীত ব্রিটিশ সরকার ও সেনাবাহিনী কোনো যুদ্ধে জড়াতে পারবে না ( সুতরাং রানীর দীর্ঘ শাসনামলে ব্রিটিশ সরকার ও সেনাবাহিনী যে সব যুদ্ধে জড়িয়েছে ও বর্তমানে জড়িত আছে যেমন ইউক্রেন - রাশিয়া যুদ্ধ সেগুলোর সবকটিতেই রানীর অনুমোদন ও সম্মতি ছিল । ) পার্লামেন্টের পাশ করা কোনো আইনও বলবৎ হবে না রাজা/ রানীর অনুমোদন ব্যতীত। বরং ব্রিটিশ রাজা / রানী পারে মন্ত্রী পরিষদ ,  প্রধান মন্ত্রী , পার্লামেন্টকে বরখাস্ত করতে । রানী পারে ব্রিটেন বাসীকে সেনাবাহিনীতে তলব করতে । আর সেনাবাহিনী হচ্ছে ব্রিটিশ রাজ বা রানীর তাজ ও তখত (রাজমুকুট ও সিংহাসন) রক্ষা করার দায়িত্ব ভার প্রাপ্ত! কারণ , ব্রিটিশ রাজ বা রানী বাঁচলে দেশ ( ব্রিটেন )ও বাঁচবে। ব্রিটেনের জাতীয় সংগীত নেই। আছে রাজা বা রানীর বন্দনা সংগীত। আর সেটাই ব্রিটেন ও তার নিয়ন্ত্রিত বেশ কয়েকটি দেশেরও জাতীয় সংগীত!
 
অতএব এত ব্যাপক বিস্তৃত শক্তি , শাসন কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার অধিকারিনী এই খবীস , হারামী, রক্তপিপাসু রক্তচোষা ডাইনী রানীকে কিভাবে দুর্নাম ছুঁতে পারে নি এত সব অপকীর্তি কুকর্ম ও অপরাধ করার পরও ? তাহলে ইত্তেফাক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে কি নিজেকে হারামী অপরাধী হারামজাদী কলঙ্কিত রানীর সকল দুষ্কর্ম , কলঙ্ক ও দুর্নামের অংশীদার করেছে ?!!
 
যে ব্যক্তি অপরাধীর সমর্থক এবং অপরাধীকে অপরাধ থেকে মুক্ত ও পবিত্র দেখাতে চাইবে ও চেষ্টা করবে এবং এ ভাবে অপরাধীর অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করবে সে আসলে ঐ অপরাধীর মতোই সমান অপরাধী ।
 
ইসলামী চিন্তাবিদ এবং গবেষক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

 

captcha